রমজানের মাসটি বছরের অন্যান্য সময়ের মতো নয়। এই মাসে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাসজুড়ে দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকতে হয়। এ কারণে অনেক অভ্যাসে পরিবর্তন আসে। যেহেতু সারাদিন না খেয়ে থাকতে হয় তাই কিছুটা ক্লান্তি আসা স্বাভাবিক। সেহেরি ও ইফতারের সময়ও তাই খাবারসহ অন্যান্য দিকে খেয়াল রাখতে হবে। রোজায় সুস্থতা বজায় রাখতে চাইলে এই কাজগুলো করুন

হালকা খাবার খান

ইফতারে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার অভ্যাস অধিকাংশ মানুষেরই। যতদিন এই অভ্যাস থেকে দূরে সরে আসতে না পারবেন, ততদিন সুস্বাস্থ্যের আশা করা যাবে না। কারণ সারাদিন খালি পেটে থাকার পর ডুবো তেলে ভাজা বা অতিরিক্ত মসলাদার খাবার খেলে আমাদের পাকস্থলী তা সহজে হজম করতে পারে না। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। গ্যাসের সমস্যা তো বাড়েই, সেইসঙ্গে পেটে আরও অনেক সমস্যা দেখা দেয়। তাই রোজায় যতটা সম্ভব হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান। প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের সবগুলো খাবারের তালিকায় যেন উপস্থিত থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। সেহেরিতে হালকা তেল- মসলায় রান্না করা খাবার খান। ইফতারে ভাজাপোড়া এড়িয়ে চিড়া, দই, মুড়ি, ফল, ফলের রস, সালাদ ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে শরীর সুস্থ রাখা সহজ হবে।

খেয়াল রাখুন ঘুমের দিকে

রমজান মাসে ঘুমের নিয়মে কিছুটা পরিবর্তন আসে। কারণ সেহেরি খাওয়ার জন্য ভোর রাতে জাগতে হয়। তাই এই মাসে রাত না জেগে চেষ্টা করুন আগেভাগে ঘুমিয়ে পড়তে। নামাজ ও অন্যান্য জরুরি কাজ সঠিক সময়েই সেরে ফেলুন। এতে করে সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া সহজ হবে। ঘুমের সময় হাতে স্মার্টফোন বা অন্য কোনও গ্যাজেট রাখবেন না। এতে ঘুমে বিলম্ব হতে পারে। রোজায় ঘুম পূর্ণ হলে শরীর সুস্থ রাখা সহজ হবে যাবে।

অতিরিক্ত কাজ করবেন না

রমজান মাসে অনেকে অতিরিক্ত কাজের চাপ নেন। এমনটা করা যাবে না। যতটা সম্ভব নির্ভার থাকার চেষ্টা করুন। অনেক গৃহিনী ইফতারের জন্য হরেকরকম খাবার তৈরি করে থাকেন। এতে অপচয় তো হয়ই, শরীরে দুর্বলতাও চলে আসে। তাই অতিরিক্ত খাবার তৈরির প্রয়োজন নেই। রমজান হলো সংযমের মাস। খাবারের ক্ষেত্রেও সংযম আনার চেষ্টা করুন। রান্নাবান্না ছাড়াও এসময় খুব বেশি পরিশ্রম হয় এমন কাজ এড়িয়ে যান। নয়তো সতজেই ক্লান্ত হয়ে যেতে পারেন।

পানি পান করুন

যেহেতু দিনের বেলা খাবার খাওয়া সম্ভব নয় তাই ইফতারের পর কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে দিয়ে পানি পান করুন। সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। আর এ কারণে শরীরে আরও অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শরীরে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখার চেষ্টা করুন। পানি, শরবত, ফলের রস, পানিযুক্ত ফল ও সবজি খান। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দূর হবে।

সচল রাখুন নিজেকে

রোজা রেখেছেন বলেই অলস শুয়ে- বসে থাকবেন না। নিজেকে সচল রাখার চেষ্টা করুন। নিয়মিত যে কাজগুলো করতেন, সেগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন। তবে অতিরিক্ত পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলুন। শরীরচর্চার মতো কাজগুলো এসময় কমিয়ে আনতে হবে। একটানা বসে থাকা কিংবা কাজ না করে থাকার অভ্যাস করবেন না। নিয়মিত নামাজ আদায় করুন। এতে মন ও শরীর দুটোই সুস্থ থাকবে।

Leave A Reply

Exit mobile version