বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আপাতত গুলশানের বাসাতেই (ফিরোজা) মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড আরও ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আগের মতোই দুই শর্ত বহাল রেখে নবমবারের মতো খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিত করা হলো। শর্ত দুটি হলো-খালেদা জিয়া তার বাসভবনে থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ প্রজ্ঞাপন দিয়েছে।

চিকিৎসক জাহিদ হোসেন বলেন, বুধবার দুপুরের পর থেকে তিনি (খালেদা জিয়া) একটু অসুস্থতা বোধ করছিলেন। সেই কারণেই রোজার দিন বলে ইফতারের পরে তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ম্যাডামের বেশ কয়েকবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। ইতিমধ্যে তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো সম্ভব হয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনায় তারা (মেডিকেল বোর্ড) মনে করছে, তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। সেহেতু আপাতত তিনি মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে বাসাতেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে থাকবেন।

তিনি বলেন, কোন কারণে যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তাকে (বিএনপি চেয়ারপাসন) যেকোনো সময় হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হতে পারে। এখন তিনি দুপুর ও সন্ধ্যার চেয়ে অনেকটাই সুস্থতাবোধ করছেন। সেজন্য আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন এবং আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে যান বিএনপি চেয়ারপারসন। ওই সময় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। ভর্তির একদিন পরেই ১৪ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় ফিরেন তিনি।

গত বছরের ৯ই আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ই জানুয়ারি তার গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭শে অক্টোবর।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপারসন ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন তিনি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

Leave A Reply

Exit mobile version