বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমাদের জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি হবে ২০২৪-এর গণবিপ্লব। এই গণবিপ্লবের চেতনাকে পাস কাটিয়ে আমাদের দল এবং অন্য কোনো দল যেন ভিন্ন পথে হাঁটার চিন্তা না করে। যারাই হাঁটবে তাদেরই স্বৈরাচারের রাস্তা ধরতে হবে।’ গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা নগপাড়া এলাকার সাগর-সৈকত কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত দলের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমি আমার এবং সব রাজনৈতিক দলকে সতর্ক করে বলতে চাই, জনগণের চেতনার বিপক্ষে আমরা যেন কেউ না দাঁড়াই। আমাদের অবশ্যই জনগণের পক্ষে শক্ত করে দাঁড়াতে হবে। জনগণের ন্যায্য দাবি যদি থাকে, সেই দাবিকে পাশ কাটানোর চেষ্টা বা দুঃসাহস আমরা যেন কেউ না দেখাই।’ তিনি বলেন, “জুলাই আন্দোলনে যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁরা আমাদের কলিজার টুকরা।
তাঁদের দাবি ছিল, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ অর্থাৎ আমরা সুবিচার চাই। সুবিচার যে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে, সেখানে ডাকাত ও চোরের কোনো জায়গা নেই। সেখানে সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচারের কোনো সুযোগ নেই। যেখানে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হবে সেখানে ঘুষের রমরমা বাণিজ্য চলবে না।
”
জাতীয় সংকটে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা বলেছি, দল ও ধর্ম যার যার, দেশ আমাদের সবার। দেশের মৌলিক স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো বিভাজন এই জাতি কামনা করে না। সংকট এসেছে, সংকট আছে, সংকট থাকবে। সব জাতীয় সংকট ঐক্যবদ্ধভাবে এই জাতি মোকাবেলা করবে।’
তিনি বিগত সরকারের নানা অপকর্মের কথা তুলে ধরে বলেন, আগের সরকারের মন্ত্রীরা, এমনকি অর্থমন্ত্রী একসময় বলতেন, ‘ঘুষকে এখন ঘুষ বলা ঠিক হবে না। এটাকে স্পিড মানি বলতে হবে। তাঁরা ঘুষকে এভাবে জাতীয়করণ করেছিলেন ঘোষণা দিয়ে।’ আরেক মন্ত্রী বলতেন, ‘আমার মন্ত্রণালয়ে ঘুষ খাবেন, কিন্তু একটু কম করে নিয়েন।’
বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, ‘একজন নাগরিক যে পর্যায়ের, যে দলের বা ধর্মের হোক তিনি আদালতে গেলে ন্যায়বিচার পাবেন। ন্যায়বিচার বঞ্চিত হবেন না। কারো টেলিফোনের কারণে যেন একজন নাগরিকের জীবনে অত্যাচারের স্টিমরোলার না চলে। বিচার প্রার্থীকে যেন ন্যায়বিচারের জন্য এ দুয়ার থেকে সে দুয়ারে ঘুরতে না হয়। বিচার কারো মুখ দেখে কিংবা কারো টেলিফোনে প্রভাবিত হবে না, ইনশাআল্লাহ।’
গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির ড. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সফি উদ্দিন, জেলা নায়েবে আমির আব্দুল হাকিম ও মাওলানা সেফাউল হক, জেলা সহকারী সেক্রেটারি আনিসুর রহমান বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, মহানগর জামায়াতের আমির অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, নায়েবে আমির খায়রুল হাসান, সেক্রেটারি আবু সাইদ ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।