‘যারা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নাশকতা করছে, তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তাদের কোনো ক্ষমা নেই।’-প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার গণভবনে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গ্যাস কাটার মেশিন দিয়ে প্রায় ২০ ফুট রেল ট্র্যাক কাটার ফলে নেত্রকোনা থেকে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের আটটি বগি গাজীপুরে লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়। হরতাল-অবরোধের নামে বিএনপি-জামায়াত চক্র গাজীপুরে রেললাইন উপড়ে ফেলার কারণে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের জন্য কোনো ক্ষমা নেই। তাদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আমি জনগণকেও বলব, তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।’
তিনি বলেন, ‘যারা মানুষ মারার জন্য রেললাইন উপড়ে ফেলে বা রেললাইন কেটে দিয়ে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে মানুষ মারার কল্পনা করে বা জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে, এদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ বলে কিচ্ছু নেই। এটা জনগণকেই প্রতিহত করতে হবে। সেটাই সারা দেশের মানুষের প্রতি আমার আহ্বান।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা রেললাইন কেটে দিয়ে বগি ফেলে মানুষ হত্যার পরিকল্পনা করে আর আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, পিটিয়ে পিটিয়ে পুলিশ-সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে মারে, মিছিলে মেয়েদের ওপর অত্যাচার করে, এদের ক্ষমা নাই। এদের শাস্তি একদিন পেতেই হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগেও কয়েকবার এ ধরনের কাজ বিএনপির সন্ত্রাসীরা করেছে, সেটা সাথে সাথে ধরা পড়েছে। কাজেই আমরা সেখানে মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি। কিন্তু এটা হয়েছে একেবারে ভোর রাতের দিকে, সাড়ে চারটার দিকে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চাল যাচ্ছে, চালের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, ধান যাচ্ছে, ধানের গাড়ি পোড়াচ্ছে। মানে মানুষকে ক্ষুধায় মারা। এই ঘটনা এর আগেও তারা করেছে ২০১৩ সালে। আমি জানি না তাদের কোনোমতে কেউ থামাতে পারবেন কি না। এই মানুষ হত্যা করে সরকার উৎখাত তো করতে পারবে না।’
বিএনপির রাজনীতির লক্ষ্য এবং আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই দেশে তারা কী রাজনীতি করে, তাদের দলটা কোথায়। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুর্ভাগ্য। যেখানে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, সেই সময় যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটায়, এ দেশের ভবিষ্যৎটা কী। সেটাই আমার প্রশ্ন।’ সূত্র – বাসস।
গত আগস্টে নির্বাচিত ২০২৩-২০২৫ মেয়াদের কমিটির সদস্যরা এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী এবং তিন সহসভাপতি খায়রুল হুদা, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার ও যশোদা জীবন দেবনাথসহ নবনির্বাচিত সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।